নটরডেমের ছেলেটা প্রেমে ব্যার্থ
হয়ে
সুইসাইড করল। এজিবি কলোনির এক
দালানে পাওয়া গেল ছেলেটার ঝুলন্স
লাশ। মেয়েটার হয়ত ততক্ষণে বিয়ে
হয়ে
গেছে। কিছুদিন পর ভুলেও যাবে। আমি
একটা ছেলেকে চিনি যার হয়ত বেচে
থাকার কথাই ছিলনা। আসেন বলি
গল্পটা
.
এস এস সি দিয়ে ঢাকা শহরে পা রাখে
ছেলেটা। অচেনা শহরে সবই অচেনা।
বাসার অপজিটের বাসার বারান্দায়
এক
মেয়ে আসত। চোখা চোখি হত। নাম্বার
বিনিময়ে হল একসময়। সেসময় ডিজুসের
যুগ
ছিল। রাতে ফ্রি। মেয়েটা ছেলেটার
নিশ্বাসের শব্দ শুনে শুনে প্রতিদিন
ঘুমোত। শহরের আইল্যান্ডে ওরা উড়াল
ভালোবাসার পতাকা
.
ছেলের মা বুঝতে পারল ছেলের
পরিবর্তন
হয়েছে কিছু একটা। মায়ের ভয় লাগল।
ছেলে শহরে নতুন। পা পিছলে পড়লে না
যায়। সাবধান করতে গেল। কিন্তু ছেলে
তখন কলেজ লাইফের প্রেমে। শুনার
টাইম
আছে। মা কিছু বললে উলটা ধমক মারে
- তুমি বেশি বুঝ আম্মা
.
মেয়েটার জন্য ছেলেটার ভালোবাসার
একটা নমুনা দেই। ফ্যান্টাসি
কিংডমের
ভেতরে ওয়াটার কিংডম তখন নতুন
খুলেছে। মেয়ে বায়না ধরল প্রেমিকের
কাছে ওয়াটার কিংডম যাবে। বাসে
যাওয়ার পথে মেয়ের স্যান্ডেল গেল
ছিড়ে। ফ্যান্টাসি কিংডমের মত একটা
রিমোট এরিয়ায় জুতার দোকানও নেই
মুচিও নেই। মেয়েকে খালি পায়েই
হাটতে হবে। ছেলে চিন্তা করল
প্রেমিকা তার খালি পায়ে হাটবে এত
মানুষের সামনে। যে ভাবা সে কাজ।
.
বাস থেকে নেমে কোলে তুলে নিল
প্রেমিক প্রেমিকাকে। সেদিন ছেলেটা
মেয়েটাকে কোলে করে ওয়াটার
কিংডমে নিয়ে গিয়েছিল। কোলে করেই
ফেরত এনেছিল। আশেপাশের সবাই এক
প্রেমিকের রোদে হাপাতে হাপাতে
প্রেমিকাকে কোলে করে নেয়ার দৃশ্য হা
করে দেখছিল। এই ছিল তার ভালোবাসা
.
কষ্টের দিনগুলো শুরু হল দু বছর পর।
ছেলের
তখন এইচ এস সি পরীক্ষা। ফিজিক্স
প্র্যাক্টিকালের আগের দিন। মেয়ে
হঠাত করে ছেলেটার কাছে কনফেস
করল।
তার আরেকটা রিলেশান আছে দু মাস
হয়।
সে ছেলের সাথে ফিজিক্যাল
রিলেশানও নাকি হয়েছে। ছেলের
মাথের উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। ছেলে
সেদিন প্রথম জীবনে গাজায় টান দের।
দেয়না ফিজিক্স প্র্যাক্টিকাল। যে
ছেলের এ প্লাস পাওয়ার কথা সে ছেলে
ফিজিক্স প্র্যাক্টিকালে অনুপস্থিত
থাকার জন্য ফেইক করল। বাবা মায়ের
মাথায় হাত। ছেলের সেদিকে খবর
নেই।
ছেলে তখন মদের বোতলে চুর
.
এরপর শুরু হল আরেক নাটক। মেয়ে ক্ষমা
চেয়ে ছেলের জীবনে ফিরে আসতে
চাইল। ছেলে আবার ভুলল মেয়ের চোখের
পানিতে। ক্ষমা করে ফিরিয়ে নিল।
জানত না এটা ছিল মেয়ের আরেক টা
চাল। এর ছয় সাত মাস পরে শেষ
ধাক্কাটা দিল মেয়ে। জানিয়ে দিল
আবার সে অন্য ছেলের সাথে লুকিয়ে
প্রেম করেছে। ফিজিক্যাল রিলেশানও
করেছে।
.
এবার অবশ্য এক্সট্রা হিসেবে পেটে
বাচ্চা নিয়ে এসেছে। ঐ প্রেমিক
ভেগেছে সেটা শুনে। এদিকে মেয়ের
বাসায় বুঝে গেছে সে প্রেগনেন্ট।
কিন্তু
তারাত জানে মেয়ের সাথে এক ছেলের
তিন বছরের রিলেশান। মানে
ছেলেটার।
তারা ভেবেছে বাচ্চাও সে ছেলের
.
মেয়ে পায়ে ধরল ছেলের। প্লিয তুমি
বল
বাচ্চাটা তোমার। ওরা জানে আমাদের
কথা। ওরা যদি এখন শুনে আমি তাদের
মেয়ে হয়ে এমন কাজ করেছি অন্য কারো
সাথে। ছেলে সেদিন ও মেয়ে টাকে
ক্ষমা করে দিয়েছিল। মেয়েটির
পরিবারের কাছে মেয়ের মান সম্মান
বাচাতে তার বাচ্চার সমস্ত দায়িত্ব
নিজের মাথার উপর নিয়ে ছেলে
মেয়েটার এবোরশন করায়। মেয়ের
বাবা
গুন্ডা দিয়ে ছেলেটাকে পেটায়। তার
মেয়ে থেকে দূরে সড়ে যেতে বলে।
ছেলের কান্ড শুনে ছেলের বাবাও
ছেলের মুখ দেখতে অস্বীকার করে।
ছেলে তবুও কাউকে বলেন এই বাচ্চা
তার
না। এই বাচ্চা ঐ মেয়ের পাপের ফসল।
.
এরপর ছেলেটার মানসিক সমস্যা দেখা
দেয়। পাগলের মত রাস্তায় রাস্তায়
হাটত। সে মেয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল
করে তখন নতুন কারো সাথে ব্যাস্ত।
ছেলে পাগলের মত ফোন দিয়ে মেয়েকে
ওয়েটিং পেত। মেয়ে ফোন ধরে বলত
- আমি আমার বি এফের সাথে কথা
বলছি। পেইন দিবানা
ছেলের সারারাত মেয়েটাকে কল দিত
ওয়েটিং এর দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে
ফুপিয়ে কেদে বলত
- প্লিয একবার কল ধরো। একটাবার।
আমি
তোমার ভয়েস টা কেবল শুনব।
মেয়ে ধরেনা। ছেলেটা ছবির হাটের
ভেতরের এক কোণায় বসে গিটার
বাজাতে রোজ সন্ধ্যায়। রাত হলে
সেখানেই পুরোন খবরের কাগজ বিছিয়ে
ফুটপাতে ঘুমাত। কোনদিন বাসায় ফিরত
না
.
সেই দিন নানা। পাগল ছেলে একদিন
উঠে দাঁড়ায়। মায়ের চোখের পানি
মুছে।
মা কে কথা দেয় যা হারিয়েছে তা
ফিরিয়ে আনবে। মায়ের ছেলেকে
ফিরিয়ে আনবে। পুনরায় এইচ এস সি
দিয়ে
ভাল করে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে টপ
গ্রেড পেয়ে। ছেলে আজ ভালো
কোম্পানিতে ভাল জবে ঢুকেছে। একদিন
সে মেয়ে হুট করে ছেলের আইডিতে নক
দেয়। ছেলে তখন স্ট্যাটাস লিখছিল।
- তোমার এত ফলোয়ার। এত জন চিনে।
আমার এক্স বি এফ তোমার ফ্যান ছিল।
আমার ফ্রেন্ডরাও তোমার কথা বলে।
আচ্ছা আমরা কি আবার এক হতে
পারিনা সব ভুলে
.
মেয়েটাকে চিনতে পেরে স্বাভাবিক
ভাবে ছেলেটা মেয়েটার মেসেজের
আন্সার দেয়
- দেখেন আমি স্ট্যাটাস লিখতেছি।
লেখার সময় নক দিয়ে পেইন দিবেন
না।
আর আমার লিস্ট ফুল। এড করে এক করতে
পারলাম না তাই
.
মুচকি এসে এরপর ছেলে তার মা কে ফোন
দেয়
- আম্মা তুমি ঠিকি বলেছিলে। সুখের
দিনে কাকের অভাব হয় না।
FB: Abeg MoY Dipu